![](https://dailykolomkotha.com/wp-content/uploads/2022/01/5b25720d-35a4-42f2-903e-36ed2bde44cb_nn.jpg)
ছবি সংগৃহীত
ছবি সংগৃহীত
নিউজিল্যান্ডের জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডেন। তার জনপ্রিয়তা শুধু নিউজিল্যান্ডেই নয়, সারাবিশ্ব তাকে খুব ভালোভাবে চেনে। এর অন্যতম কারণ, তার নেতৃত্বগুণ ও নমনীয়তা। বিশ্বের কনিষ্ঠতম মহিলা প্রধানমন্ত্রী তিনি। ২০১৭ সালে মাত্র ৩৭ বছর বয়সে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন। একজন নারী হয়েও তিনি সামলাচ্ছেন দেশের প্রধানমন্ত্রীত্বের মত গুরুত্বপূর্ণ পদ। কন্যা সন্তানের মা হয়েছেন কয়েক বছর আগেই। এই কন্যাকে নিয়ে ঘুরেছেন জাতিসংঘ ও নিজ দেশের সংসদে।
প্রিয় মানুষের সাথে দীর্ঘদিন একসাথে থাকার পর বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছিলেন সম্প্রতি। কিন্তু বাধ সাধলো মহামারী করোনা। লকডাউন পড়ে গেল নিউজিল্যান্ডসহ বিশ্বের সর্বত্রই। দেশের মানুষের চিন্তায় জন্য বাতিল করে দিলেন নিজের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা! অথচ এই বিয়ের জন্য তিনি অপেক্ষা করে ছিলেন গত চার বছর ধরে। নানা রাজনৈতিক কারণে বিয়ের তারিখ ঠিক করা হয়ে ওঠেনি। পাত্র-পাত্রী রাজি হলেও প্রতিবার কোনও না কোনও বাধা এসেছে সামনে।
জেসিন্ডার পেছনের গল্প
২০২০ সালে বিপুল ভোটে জিতে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসেন জেসিন্ডা আর্ডেন। তার দল লেবার পার্টিও তার নেতৃত্বে প্রচুর আসন পায়। এরপরই দায়িত্ব অনেকটা বেড়ে যায় তার। ফলে বিয়ের আয়োজনের সময় পাননি জেসিন্ডা। এর আগে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হেলেন ক্লার্ক এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টোনি ব্লেয়ারের দফতরে অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করেছেন জেসিন্ডা। ২০০৮ সালে প্রথম নিউজিল্যান্ডের হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভস-এর সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। তবে রাজনীতিতে জেসিন্দার যোগদান তারও অনেক আগে থেকে। ১৯৯৭ সাল থেকে তিনি লেবার পার্টির সঙ্গে কাজ করছেন।
তখন তার বয়স ১৭। এরপর ২০০১ সালে গণযোগাযোগের ওপর স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। বিদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রধানের দফতরে কাজ করতে শুরু করেন জেসিন্ডা। দেশে ফিরে বিভিন্ন সামাজিক সংস্কারমূলক কাজ এবং সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত করেন নিজেকে।
সাংবাদিক যখন প্রধানমন্ত্রীর হবু বর
জেসিন্ডা তার সঙ্গী ক্লার্ক গেফোর্ডকে পছন্দ করেন ২০১২ সাল থেকে। ক্লার্ক পেশায় একজন সাংবাদিক। তখনও জেসিন্ডা প্রধানমন্ত্রী হননি। তবে দেশের প্রধান বিরোধী দলের এমপি ছিলেন। ছয় বছর পর ২০১৮ সালে ক্লার্কের সন্তানের জন্ম দেন জেসিন্ডা। এখন তিনি একটি চার বছরের কন্যা সন্তানের মা। জেসিন্ডা দ্বিতীয় রাষ্ট্রপ্রধান, যিনি প্রধান পদে থাকাকালীন অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন এবং সন্তানের জন্মও দিয়েছেন। ২০১৮ সালে জেসিন্ডা মা হওয়ার পরই তাঁর বিয়ে নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাতে ব্যস্ত জেসিন্ডা বিয়ে করার সময় পাননি।
এর মধ্যেই লেবার পার্টির প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয় জেসিন্ডাকে। কোলের মেয়েকে সামলে একদিকে প্রধানমন্ত্রীর পদ, অপরদিকে দলের দায়িত্ব সামলেছেন জেসিন্ডা। ২০২০ সালে তাঁর নেতৃত্বেই নিউজিল্যান্ডে জয়ী হয় লেবার পার্টি। দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হন জেসিন্ডা। সবাই ভেবেছিল এবার হয়তো বিয়ে করবেন প্রেমিক ক্লার্ককে। কিন্তু এরপরই আসে কোভিড। গত দু’বছর শিশুদের অপুষ্টি, দারিদ্র, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য কাজ করে চলেছে নিউজিল্যান্ডের জেসিন্ডার সরকার।
ঠিক ছিল ২০২২ সালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিয়ে করবেন এই জুটি। বিয়ের তারিখও ঠিক করে ফেলেছিলেন তারা। কিন্তু এবারও ওমিক্রনের ধাক্কায় পিছিয়ে গেল বিয়ে। করোনা প্রতিরোধে ফের কড়াকড়ি আরোপ হলো নিউজিল্যান্ডে।
দেশে এখন মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। সভা-সমাবেশ বন্ধ। আর তাই বিয়ের তারিখও পিছিয়ে দেন জেসিন্ডা। তিনি বলেন, আমি আহামরি কিছু করিনি। করোনা পরিস্থিতিতে নিউজিল্যান্ডের অনেককেই এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। আমি তাদের সঙ্গে যোগ দিলাম মাত্র।
কলমকথা/সাথী
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।